
কলা কি আমাদের ওজন বাড়ায়?
প্রতি কলাতে প্রায় ১০০ ক্যালোরি শক্তি থাকে যা তুলনামূলক কম।
কলাতে পেক্টিন এবং স্টার্চ রয়েছে, যা উভয় রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং খাওয়ার পরে ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। পেক্টিন একটি দ্রবণীয় ফাইবার যা ক্ষুধা মেটায় এবং ধীর গতিতে হজম করতে সাহায্য করে। ফাইবার সমৃদ্ধ ফল এবং সব্জি আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
প্রতি ১০০g কলার পুষ্টিকর মান ( ১ মাঝারি কলা = প্রায় ১১৮g ):
একটি কলার মধ্যে ক্যালোরি – ৮৯
একটি কলার মধ্যে প্রোটিন – ১.১g
একটি কলার মধ্যে শর্করা – ২৩g
একটি কলার মধ্যে চর্বি – ০.৩g
ডায়েরিয়ার জন্য কলা: একটি গবেষণাই, ডায়েরিয়া হয়েছে এমন বাচ্চাদের ৩টি দলে ভাগ করা হয় পরীক্ষার জন্য। প্রথম দলকে খাবাররের পাশাপাশি কলা খাওয়ানো হয়, দ্বিতীয় দলকে পেক্টিন এবং তৃতীয় দলকে সাদা ভাত। প্রথম দলের ৮২% বাচ্চাদের ৪ দিনের মধ্যে ডায়েরিয়া ভাল হয়ে যায়। [১]
কলা এবং রক্তচাপ: কলা পুষ্টিতে পূর্ণ, বিশেষ করে পটাসিয়াম। গবেষণায় দেখা গেছে, রক্তচাপ কমাতে পটাসিয়াম-সমৃদ্ধ খাবারের (যেমন; কলা) গুরুত্ব অনেক। রক্তচাপ এবং দেহের তরল ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে পটাসিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর, তাছাড়া হার্ট ফাংশনও নিয়ন্ত্রণ করে। [২]
[একটি কলাতে কত পটাসিয়াম আছে: একটি গড় আকারের কলাতে আছে ৪৪০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম।]
পেশী শিরটানের (muscle cramps) জন্য কলা: দেহে পটাসিয়ামের পরিমাণ কমে গেলে শিরটানের ঝুঁকি বাড়ে, এবং কলা পটাসিয়ামের একটি ভাল উৎস। একটি গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে ব্যায়াম করার ৩০ মিনিট আগে কলা খেলে ব্যায়ামের পরে পটাসিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়। [৩]
হাঁপানির জন্য কলা: একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রচুর পরিমাণ কলা খাওয়া শিশুদের কফ জমা সাথে হাঁপানি (asthma) থেকে রক্ষা করতে পারে। [৪]
পাকস্থলি ক্ষতের (peptic ulcers) জন্য কলা: কলার মধ্যে দ্রবণীয় ফাইবার প্যাকটিন বেশি থাকার জন্য তারা পাকস্থলীর পথ মসৃণ রাখে। প্যাকটিন আন্ত্রিক ফাংশন স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে এবং পেপটিক আলসারের চিকিৎসাতে কলা উপকারী। কলাতে প্রোটিয়েজ ইনহিবিটর নামে পরিচিত যৌগিক পদার্থ থাকে যা H. Pylori-র মত ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে, বেশির ভাগ পেপটিক আলসারের কারণ এই H. Pylori ব্যাকটেরিয়া।
সুস্থ চোখের জন্য কলা: কলা ভিটামিন ‘এ’ এর একটি উৎস, যা দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখে বিশেষ করে কম আলোতে দেখতে অনেক উপকারী।
কিডনি ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য কলা: গবেষকরা দেখিয়েছেন যে, যেসব মহিলারা সপ্তাহে ৪ থেকে ৬ বার কলা খেতে পছন্দ করে তাদের কিডনি ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি যেসব মহিলারা কলা খায়না তাদের চেয়ে 50% কম।
সুস্থ হাড়ের জন্য কলা: কলাতে ফ্রূক্টোওলিগোস্যাকারাইড থাকে, যা ক্যালসিয়ামের মতো খনিজ পদার্থ শোষণ করতে সহায়তা করে, ক্যালসিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ।
কলা এবং বিষণ্ণতা: কলাকে একটি ভাল মেজাজের খাদ্য বলে মনে করা হয়, এতে প্রচুর পরিমাণ ট্রিপটোফান থাকে, একটি দরকারি অ্যামিনো অ্যাসিড যা 5-এইচটিপি রূপে রূপান্তরিত হয়, যা পরবর্তীতে নিউরোট্রান্সমিটার সেরোটোনিন রূপে রূপান্তরিত হয় এবং বিষণ্ণতা কমায়। [৫]
Leave a Reply